আমাদের সম্পর্কে
সন্ধানী ঢাকা মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যা ১৯৭৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি স্বেচ্ছায় রক্তদান, মরণোত্তর চক্ষুদান এবং অন্যান্য সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রতিষ্ঠার পরের বছর, ১৯৭৮ সালের ২ নভেম্বর, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে অধ্যাপক ডা. আবদুল কাদেরের সহায়তায় সন্ধানী প্রথমবারের মতো 'স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি' আয়োজন করে। সন্ধানীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইদ্রিস আলী মঞ্জু প্রথম রক্তদান করেন, এবং তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী হোসনে আরা লাকী প্রথম নারী রক্তদাতা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। সেই দিনে মোট ২৭ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা হয়। ১৯৮২ সালে 'সন্ধানী ডোনার ক্লাব' প্রতিষ্ঠিত হয়, যা রক্তদাতাদের সংগঠিত করে রক্তদান কার্যক্রমকে আরও সম্প্রসারিত করে। পরবর্তীতে, ১৯৮৪ সালে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষুব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়, যা মরণোত্তর চক্ষুদান কার্যক্রমকে সমন্বিত করে। সন্ধানীর এই মহৎ উদ্যোগের স্বীকৃতিস্বরূপ এবং স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান কর্মসূচিকে সামাজিক আন্দোলনে রূপদানের লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে সরকার ২ নভেম্বর দিনটিকে 'জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস' হিসেবে সরকারিভাবে পালন করার ঘোষণা দেয়। সমাজসেবায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০০৪ সালে সন্ধানীকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার 'স্বাধীনতা পুরস্কার' প্রদান করে। সন্ধানী ঢাকা মেডিকেল কলেজ মূলত স্বেচ্ছায় রক্তদান, মরণোত্তর চক্ষুদান এবং অন্যান্য সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে নিয়োজিত। সংগঠনটি নিয়মিত রক্তদান কর্মসূচি আয়োজন করে রোগীদের জন্য নিরাপদ রক্ত সরবরাহ নিশ্চিত করে। এছাড়া, চক্ষুদান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কর্নিয়া সংগ্রহ করে অন্ধত্ব নিবারণে কাজ করে। সাম্প্রতিক সময়ে, সংগঠনটি শীতবস্ত্র বিতরণ, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সার্বিক স্বাস্থ্য সহায়তা, টিকাদান কর্মসূচি এবং অন্যান্য মানবিক কার্যক্রমেও অংশগ্রহণ করছে। সন্ধানী ঢাকা মেডিকেল কলেজ তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানবসেবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে, যা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়তা করছে।